বাসর রাত সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।বিয়ের আগে যা জানা জরুরী।

বাসর রাত সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।বিয়ের আগে যা জানা জরুরী। 

বিয়ে হচ্ছে সকল মুসলিম উম্মার জন্য ফরয কাজ। যা মহান আল্লাহ পক্ষ থেকেই এর হুকুম রয়েছে।একজন আরেক জনের বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে একটি পরিবার গঠিত হয়।যা পৃথিবী সুচনা লগ্ন থেকেই আল্লাহ পাক হযরত আদম (আঃ) এবং হাওয়া (রাঃ) থেকেই শুরু হয় আল্লাহ পক্ষ থেকে এই বিবাহ বন্ধ। আমারা বিয়ে করি কিন্তু তাতেই কি হয়ে যায় সব। কিন্তু তা হয় বিয়ে করার পর বাসর রাতের কিছু গুরুত্ব পুর্ণ কাজ রয়েছে।এর মধ্যে রয়েছে বাসর রাতের ১২ টি সুন্নাত যা আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সুন্নাত গুলি গুরুত্ব সহকারে করতেন।বাসর রাত একটি পুরুষ বা মহিলার গুরুত্ব পুর্ণ রাত। তাই আমাদের নবীর  সুন্নাত মেনেই সব কাজ করতে হয় বাসর রাতে।তা হলে আমাদের বাসর রাতের সকল শয়তানের খারাব কাজ থেকে বিরত থাকব।মহান আল্লাহ পাক নিজেই আমাদের শয়তানের হাত থেকে রক্ষা করবেন।
বাসর রাত সম্পর্কে ইসলাম কি বলে।বিয়ের আগে যা জানা জরুরী।


বাসর রাতের যে ১২ টি সুন্নত রয়েছে তার ব্যাখ্যা করা হলো:

সুন্নত নাম্বার - ১ঃ স্বামী ও স্ত্রী উভয় ভালো করে দাত ব্রাশ করে নিতে হবে। বিশেষ করে যারা ধুম্পান করেন সহবাসের যাওয়ার আগে মুখে গন্ধ থাকা যাবে না।

সুন্নত নাম্বার - ২ঃ সহবাসের আগে উভয় ভালো করে ওযু করে নিতে হবে।এবং ২ রাকাত নফল নামায পড়তে পারেন। 

সুন্নত নাম্বার - ৩ঃ বাসর ঘরে যখন বউ কে রাখা হয়।তখন তার স্বামী বাসর ঘরে ঢুকার সময় দরজা খুলেই একটু উচ্চস্বরে সালাম দিবে স্বামী যাতে সালাম টি স্ত্রীর কান পর্যন্ত যায়।এবং তার উত্তর দিতে পারে।
সালাম টি হলো: 

বাংলা উচ্চারণ
অভিবাদন জানাবেঃ 
ٱلسَّلَامُ عَلَيْكُمْ,
আস-সালামু ʿআলাইকুম

জবাবে দিবেঃ
وَعَلَيْكُمُ ٱلسَّلَامُ,
ওয়া ʿআলাইকুমু স-সালাম

অর্থ : আপনার উপর আল্লাহ তায়ালার সকল রহমত ও শান্তি বর্ষিত হক।
সাম্বী তার সালাম শুনে স্ত্রী তার সালামের জবাব দিবে আস্তে আস্তে। 

সুন্নত নাম্বার - ৪ঃ বাসর ঘরে প্রবেশ করে তার ডান হাতটি স্ত্রীর মাথার উপর রেখে এই দোয়াটি পড়তে হবে-
দোয়াটি হলো: বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শয়তানা ওয়া জান্নিবিশ শায়তানা মা রাযাকতানা।

অর্থ: হে আল্লাহ তোমার নামে আরম্ভ করছি।তুমি আমাদের নিকট হতে শয়তান কে দূরে রাখ।আমাদের এই মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন। তাকেও এই শয়তানের হাত থেকে হেফাযত কর।
সামী ও স্ত্রী এক সাথে একে অপরে  সুগুন্ধী জাতীয় কিছু লাগানো বা আতর লাগিয়ে নিতে হবে। 

সুন্নত নাম্বার -৫ঃ সহবাসের সময় কেবলা মুখি হইয়ে করবে না।

সুন্নত নাম্বার -৬ঃ সহবাস করার সময় একে বারে উলজ্ঞ হওয়া যাবে না।

সুন্নত নাম্বার -৭ঃ যদি তৃপ্তি না আসে তা হলে উপরে কোন চাদর বা কাপড় দিয়ে ঢেকে নিবেন।

সুন্নত নাম্বার -৮ঃ বির্য পাত হয়ে গেলে সাথে সাথে উপর থেকে নেমে পড়বেন না।কিছু সময় ওই অবস্থা স্থির হইয়ে বুকের উপর শুয়ে থাকবেন।তবে এত বেশি ভর দেয়া জাবেনা যাতে তার কষ্ট হয়।খেয়াল রাখতে হবে। এটি আল্লাহ তায়ালার বিধান রয়েছে।

সুন্নত নাম্বার -৯ঃ কোন অবস্থা স্ত্রীর পায়ু পথে বা মলদার পথে সহবাস করার চিন্তাও করবেন না।কারন এটা মহাপাপ যা কোরান হাদিসে ও রাসুল (সা:) নিজেই কঠিন ভাবে নিষেধ করেছেন।তবে বিজ্ঞানীদের মতে উভয়ের কঠিন রোগের সম্ভাবনা থাকে বেশি।বার বার পায়ু পথে সজ্ঞম করলে ইমার্জেন্সি সময়ে মল আটকে রাখা যায় না।পায়ু পথ ডিলে হয়ার কারনে মল টয়লেট যাওয়ার আগেই বেরিয়ে যায়।

সুন্নত নাম্বার -১০ঃ কোন অবস্থা নেশা জাতীয় কোন খাবার বা পানিও এমন খেয়ে সহবাস করা যাবে না।কারন এ সময় বির্যের সঠিক গঠন ঠিক থাকে না যার ফলে সামী স্ত্রী উভয় পূর্ণ তৃপ্তি পায় না।

সুন্নত নাম্বার -১১ঃ কারো সামনে সহবাস করা যাবে না।এমন কি আড়াই থেকে ৩ বছরের বাচ্ছার সামনেও।

সুন্নত নাম্বার -১২ঃ সহবাসের সময় স্ত্রীর পুর্ণ তৃপ্তি না হয়া পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন হওয়া যাবে না।আর স্ত্রীর হায়েস নেফাসের সময় (ঋতুকালীন) সময় সহবাস করা যাবে না।

বিশেষ কথা: আমরা অবশ্যই বাসর ঘরে সুন্নত গুলো মেনে চলব। এবং এই সুন্নত গুলো মেনে যে সহবাস করবে তাকে আল্লাহ পাক নিজেই উত্তম সন্তান দান করবেন।আমিন। আমার এই কথাই যদি কোন ভুলত্রুটি থাকে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখেন।আর কোন তথ্য বাদ পড়লে কমেন্ট বক্সে জানাবেন।আল্লাহ পাক আমাদের নবির সুন্নত গুলো মানার তৌফিক দান করুন। ধন্যবাদ সবাইকে।

Post a Comment (0)
Previous Post Next Post